এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ১০ম অধ্যায় সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্সের নোটটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যার মাধ্যমে তুমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় , মেডিকেল কলেজ পরিক্ষা ও ইন্জিনিয়ারিং পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে । সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স পদার্থবিজ্ঞানের দুটি মৌলিক ক্ষেত্র যা আধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেমিকন্ডাক্টরের বৈশিষ্ট্য, এর প্রকারভেদ এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলির কার্যপ্রণালী এই অধ্যায়ের মূল বিষয়। সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স অধ্যায় আধুনিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং প্রযুক্তির ভিত্তি। এটি সেমিকন্ডাক্টরের মৌলিক বৈশিষ্ট্য, পি-এন জংশন, ট্রানজিস্টর, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের কার্যপ্রণালী বর্ণনা করে। এই অধ্যায়টি ইলেকট্রনিক সার্কিট ডিজাইন, অ্যানালগ এবং ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সে প্রয়োগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আর দেরি না করে আমাদের সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্সের লেকচার শীটটি পড়ে ফেলুন ।।
সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স (Semiconductors and Electronics) – HSC Physics 2nd Paper
১. সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductors)
ক. সেমিকন্ডাক্টরের ধারণা
সেমিকন্ডাক্টর হল এমন একটি পদার্থ যার বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা এক্সট্রিম পজিটিভ (অন্তরক) এবং এক্সট্রিম নেতিবাচক (মেটাল) উপাদানের মধ্যে। সেমিকন্ডাক্টরের পরিবাহিতা তাপমাত্রার সাথে পরিবর্তিত হয়।
খ. সেমিকন্ডাক্টরের প্রকারভেদ
- এন-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর (n-type Semiconductor): এখানে অতিরিক্ত ইলেকট্রনের উপস্থিতি থাকে যা নেতিবাচক পরিবাহিতা বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, আর্সেনিক-ডোপড সিলিকন।
- পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর (p-type Semiconductor): এখানে হোলস (ইলেকট্রনের অভাব) থাকে যা ইতিবাচক পরিবাহিতা বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, বোরন-ডোপড সিলিকন।
গ. ডোপিং (Doping)
ডোপিং হল সেমিকন্ডাক্টরের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করতে এর মধ্যে বিশেষ আয়ন বা উপাদান যুক্ত করা। এন-টাইপ এবং পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করতে বিভিন্ন ডোপেন্ট ব্যবহার করা হয়।
ঘ. সেমিকন্ডাক্টরের বৈশিষ্ট্য
- বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা: সেমিকন্ডাক্টরের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা তাপমাত্রার সাথে বৃদ্ধি পায়।
- ব্যান্ড গ্যাপ: সেমিকন্ডাক্টরের বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারণ করে। সিলিকনের ব্যান্ড গ্যাপ প্রায় 1.1 ইলেকট্রন ভোল্ট (eV)।
২. পি-এন জংশন (PN Junction)
ক. পি-এন জংশনের সংজ্ঞা
পি-এন জংশন হল একটি সেমিকন্ডাক্টর যা এন-টাইপ এবং পি-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের সংযোগস্থল। এটি বৈদ্যুতিক বর্তমান প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
খ. পি-এন জংশনের বৈশিষ্ট্য
- ডায়োড (Diode): পি-এন জংশন একটি ডায়োড গঠন করে যা একদিকে বৈদ্যুতিক প্রবাহ (ফরওয়ার্ড বায়াস) এবং অন্যদিকে রোধ (রিভার্স বায়াস) করে।
গ. ডায়োডের বৈশিষ্ট্য
- ফরওয়ার্ড বায়াস: যখন পি-এন জংশনকে সরাসরি সংযোগ করা হয়, এটি প্রবাহিত প্রবাহের অনুমতি দেয়।
- রিভার্স বায়াস: যখন পি-এন জংশন বিপরীতভাবে সংযোগ করা হয়, এটি প্রবাহিত প্রবাহ রোধ করে।
৩. ট্রানজিস্টর (Transistor)
ক. ট্রানজিস্টরের প্রকারভেদ
- বাইপোলার জাংশন ট্রানজিস্টর (BJT): এটি তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত: ইমিটার (Emitter), বেস (Base), এবং কালেক্টর (Collector)। BJT দুই ধরনের: এন-পি-এন এবং পি-এন-পি।
- ফিল্ড-ইফেক্ট ট্রানজিস্টর (FET): এটি একটি গেট (Gate), ড্রেন (Drain), এবং সোর্স (Source) নিয়ে গঠিত। FET-এর প্রকারভেদ: JFET (জাংশন FET) এবং MOSFET (মেটাল-অক্সাইড-সেমিকন্ডাক্টর FET)।
খ. ট্রানজিস্টরের কার্যপদ্ধতি
- BJT: একটি ছোট বেস প্রবাহ বড় কালেক্টর-ইমিটার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
- FET: গেটের ভোল্টেজ দ্বারা ড্রেন-সোর্স প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
গ. ট্রানজিস্টরের অ্যাপ্লিকেশন
- অ্যাম্প্লিফায়ার: সংকেত বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়।
- সুইচ: বৈদ্যুতিক সুইচিং কাজে ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন :
- এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ৭ম অধ্যায় ভৌত আলোকবিজ্ঞানের নোট
- এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ৯ম অধ্যায় পরমাণুর মডেল এবং নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান নোট
- এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ১ম অধ্যায় তাপগতিবিদ্যার নোট
- এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ৫ম অধ্যায় তড়িৎ চৌম্বক আবেশ ও পরিবর্তী প্রবাহ নোট
৪. ইলেকট্রনিক ডিভাইস (Electronic Devices)
ক. রেজিস্টর (Resistor)
রেজিস্টর বৈদ্যুতিক বর্তমান প্রবাহ সীমিত করতে ব্যবহৃত হয়। এর বৈশিষ্ট্য রেজিস্ট্যান্স (R) দ্বারা বর্ণিত হয়:

এখানে,
V = ভোল্টেজ এবং
I = বর্তমান।
খ. ক্যাপাসিটার (Capacitor)
ক্যাপাসিটার বিদ্যুৎ ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এর বৈশিষ্ট্য ক্যাপাসিট্যান্স (C) দ্বারা বর্ণিত হয়:

এখানে,
Q = চার্জ এবং
V = ভোল্টেজ।
গ. ইন্ডাক্টর (Inductor)
ইন্ডাক্টর একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে। এর বৈশিষ্ট্য ইনডাকট্যান্স (L) দ্বারা বর্ণিত হয়:

৫. সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসের অ্যাপ্লিকেশন (Applications of Semiconductor Devices)
ক. রেকটিফায়ার (Rectifier)
রেকটিফায়ার AC ভোল্টেজকে DC ভোল্টেজে রূপান্তরিত করে। বিভিন্ন প্রকারের রেকটিফায়ার: হাফ-ওয়েভ এবং ফুল-ওয়েভ।
খ. অ্যাম্প্লিফায়ার (Amplifier)
অ্যাম্প্লিফায়ার একটি ছোট সংকেতকে বড় সংকেততে রূপান্তরিত করে। বিভিন্ন প্রকার: ক্যালেক্টর, স্টেজ, এবং অপারেশন অ্যাম্প্লিফায়ার।
গ. স্যুইচিং সার্কিট (Switching Circuits)
স্যুইচিং সার্কিট ডিজিটাল লজিক গেট এবং অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যে ব্যবহার করা হয়।
এইচএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের ১০ম অধ্যায় সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্সের লেকচার শীটটি ডাউনলোড করুন :