এইচএসসি আইসিটির দ্বিতীয় অধ্যায় “ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং” নিয়ে আলোচনা করে। এই অধ্যায়টি ডেটা কমিউনিকেশন বা তথ্য আদান-প্রদানের প্রক্রিয়া এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মূল ধারণা এবং প্রয়োগ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করে তোলে। ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম এই লেকচার শীটটে যে বিষয় গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা হলো : বহুনির্বাচনি প্রশ্ন বা MCQ , জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর , সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর এবং ভর্তি পরিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় গাইড যেই গুলো PDF আকারে দেওয়া ।।
১. ডেটা কমিউনিকেশন: ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম
- ডেটা কমিউনিকেশনের সংজ্ঞা:
- তথ্য আদান-প্রদান বা যোগাযোগের প্রক্রিয়া, যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ডেটা বা তথ্য প্রেরণ করতে ব্যবহৃত হয়।
- এটি সিগন্যাল ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা এনালগ বা ডিজিটাল ফরম্যাটে হতে পারে।
- ডেটা ট্রান্সমিশন মোড:
- সিমপ্লেক্স (Simplex): তথ্য একমুখী ভাবে প্রবাহিত হয় (যেমন: রেডিও সম্প্রচার)।
- হাফ-ডুপ্লেক্স (Half-Duplex): তথ্য দুইমুখী হলেও একসাথে দুইদিক থেকে প্রবাহিত হতে পারে না (যেমন: walkie-talkie)।
- ফুল-ডুপ্লেক্স (Full-Duplex): তথ্য একসাথে দুইদিক থেকেই প্রবাহিত হয় (যেমন: টেলিফোন)।
- ট্রান্সমিশন মিডিয়া:
- তারযুক্ত মিডিয়া (Wired Media): কেবল বা ফাইবার অপটিক ব্যবহার করে ডেটা ট্রান্সমিশন (যেমন: ইথারনেট কেবল, ফাইবার অপটিক কেবল)।
- তারবিহীন মিডিয়া (Wireless Media): রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে ডেটা ট্রান্সমিশন (যেমন: Wi-Fi, ব্লুটুথ)।
- ডেটা ট্রান্সমিশন হার:
- বিট রেট: প্রতি সেকেন্ডে ট্রান্সফার হওয়া বিটের সংখ্যা (যেমন: 1 Mbps)।
- ব্যান্ডউইথ: একটি নেটওয়ার্ক লিঙ্কের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা ডেটার সর্বাধিক পরিমাণ (যেমন: 100 Mbps)।
২. কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং
কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং হলো ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম এর একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক :
- নেটওয়ার্কের সংজ্ঞা:
- দুটি বা ততোধিক কম্পিউটার বা ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে ডেটা শেয়ারিংয়ের প্রক্রিয়া।
- নেটওয়ার্কের ধরন:
- ল্যান (LAN – Local Area Network): ছোট পরিসরের নেটওয়ার্ক, যেমন একটি অফিস বা বাড়ি।
- ওয়ান (WAN – Wide Area Network): বৃহত্তর পরিসরের নেটওয়ার্ক, যেমন শহর বা দেশের বিভিন্ন স্থান সংযুক্ত করে।
- ম্যান (MAN – Metropolitan Area Network): শহরের পরিসরে নেটওয়ার্ক সংযোগ।
- প্যান (PAN – Personal Area Network): ব্যক্তিগত ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ, যেমন ব্লুটুথ।
- নেটওয়ার্ক টপোলজি:
- বাস টপোলজি (Bus Topology): সমস্ত ডিভাইস একসাথে একটি সোজা কেবলের সাথে সংযুক্ত থাকে।
- স্টার টপোলজি (Star Topology): কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচের মাধ্যমে সমস্ত ডিভাইস সংযুক্ত থাকে।
- রিং টপোলজি (Ring Topology): ডিভাইসগুলো একটি রিং আকারে সংযুক্ত থাকে, যেখানে প্রতিটি ডিভাইস পরবর্তী ডিভাইসে ডেটা পাঠায়।
- মেশ টপোলজি (Mesh Topology): প্রতিটি ডিভাইস অন্য সকল ডিভাইসে সরাসরি সংযুক্ত থাকে।
- নেটওয়ার্ক ডিভাইস:
- হাব (Hub): একাধিক ডিভাইসে ডেটা প্রেরণের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস, যা ডেটা সকল সংযুক্ত ডিভাইসে পাঠায়।
- সুইচ (Switch): ডেটা নির্দিষ্ট ডিভাইসে প্রেরণ করে এবং নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স উন্নত করে।
- রাউটার (Router): বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে ডেটা রুট করে এবং ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে।
- গেটওয়ে (Gateway): বিভিন্ন নেটওয়ার্ক প্রোটোকলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
আরো পড়ুন :
৩. ডেটা ট্রান্সমিশন প্রোটোকল : ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম
- TCP/IP (Transmission Control Protocol/Internet Protocol): ইন্টারনেট এবং নেটওয়ার্ক কমিউনিকেশনের জন্য ব্যবহৃত মূল প্রোটোকল, যা ডেটা প্যাকেটিং, অ্যাড্রেসিং এবং ডেলিভারি নিশ্চিত করে।
- HTTP (HyperText Transfer Protocol): ওয়েব পেজ এবং অন্যান্য অনলাইন কনটেন্টের জন্য ব্যবহৃত প্রোটোকল।
- FTP (File Transfer Protocol): ফাইল স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত প্রোটোকল।
- ওএসআই (OSI) মডেল:
- ফিজিক্যাল স্তর: সিগন্যালের ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে ডেটা প্রেরণ।
- ডাটা লিংক স্তর: ফ্রেমে ডেটা প্যাকেটিং এবং ত্রুটি সংশোধন।
- নেটওয়ার্ক স্তর: রুটিং এবং ডেটা প্যাকেটিং।
- ট্রান্সপোর্ট স্তর: ডেটার সম্পূর্ণতা এবং সঠিক স্থানান্তর নিশ্চিতকরণ।
- সেশন স্তর: সংযোগ প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা।
- প্রেজেন্টেশন স্তর: ডেটার ফরম্যাটিং এবং এনক্রিপশন।
- অ্যাপ্লিকেশন স্তর: ব্যবহারকারী ইন্টারফেস এবং অ্যাপ্লিকেশন লেভেল প্রোটোকল।
৪. নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি
- সাইবার সিকিউরিটি: নেটওয়ার্কের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সিকিউরিটি টুল এবং পদ্ধতির ব্যবহার।
- ফায়ারওয়াল: অবৈধ প্রবেশ প্রতিরোধে ব্যবহৃত ডিভাইস।
- এনক্রিপশন: ডেটার গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তি।
- অ্যান্টিভাইরাস: ভাইরাস এবং অন্যান্য ম্যালওয়্যার প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত সফটওয়্যার।
৫. নেটওয়ার্ক স্থাপনা ও ডিজাইন
- নেটওয়ার্ক ডিজাইন: একটি কার্যকরী নেটওয়ার্কের পরিকল্পনা, যার মধ্যে থাকে নেটওয়ার্ক টপোলজি, প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার।
- নেটওয়ার্ক স্থাপন: বিভিন্ন ডিভাইস সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া, যেমন কেবলিং, স্যুইচিং, রাউটিং ইত্যাদি।
৬. নেটওয়ার্কের চ্যালেঞ্জ
- সিকিউরিটি সমস্যা: সাইবার আক্রমণ, তথ্য চুরির ঝুঁকি।
- ব্যান্ডউইথ ব্যবস্থাপনা: নেটওয়ার্ক ট্রাফিক পরিচালনা এবং অপ্টিমাইজেশন।
- ডেটা লস: সংযোগ সমস্যার কারণে ডেটা হারানো বা ক্ষতি।
7. ইন্টারনেট প্রোটোকল ভার্সন
- IPv4 (Internet Protocol version 4):
- IPv4 ঠিকানা: 32-বিট ঠিকানা যা চারটি অঙ্কে বিভক্ত (যেমন: 192.168.0.1)।
- IPv6 (Internet Protocol version 6):
- IPv6 ঠিকানা: 128-বিট ঠিকানা যা আটটি হেক্সাডেসিমেল ব্লকে বিভক্ত (যেমন: 2001:0db8:85a3:0000:0000:8a2e:0370:7334)।
8. নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি
আমাদের প্রতিদিন করা নেটওয়ার্ক বিভিন্ন কারণে হ্যাক, ভাইরাস এট্যাক্ট করতে পারে । ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম এ নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।।
- সাইবার আক্রমণের ধরন:
- হ্যাকিং: অবৈধভাবে নেটওয়ার্কে প্রবেশ।
- ভাইরাস: ম্যালওয়্যার যা কম্পিউটার সিস্টেমে ক্ষতি করে।
- ডিডোস (DDoS) আক্রমণ: নেটওয়ার্কে অতিরিক্ত ট্রাফিক পাঠিয়ে পরিষেবা অকার্যকর করে।
- সিকিউরিটি পদ্ধতি:
- ফায়ারওয়াল: নেটওয়ার্কে অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে ব্যবহৃত।
- এনক্রিপশন: তথ্য নিরাপদ রাখতে এনক্রিপ্ট করা হয়।
- অ্যান্টিভাইরাস: ভাইরাস এবং অন্যান্য ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা।
ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেম সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানতে আমাদের লেকচার শীটটি ডাউনলোড করুন :